আঠারোবাঁকি নদী | Atharobanki River
দেশ – বাংলাদেশ
মোহনা – রূপসা নদী
দৈর্ঘ্য – ৫৯ কিমি (৩৭ মাইল)
আঠারোবাঁকি নদী বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের খুলনা ও নড়াইল জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি নদী। আঠারোটি বাঁকে নদীটি প্রবাহিত হয় বলে নদীটির নাম হয়েছে আঠারোবাঁকি নদী। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা ‘পাউবো’ কর্তৃক আঠারোবাঁকি নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ১।
মধূমতী নদী নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলাদ্বয়কে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে নদীটি কারিয়া উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব সিমান্তে সিংগাতি গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ গ্রামের দক্ষিণ দিকে মধুমতীর একটি শাখানদী প্রবাহিত হয়েছে । নদীটির নাম আঠারোবাঁকি। এই নদী দক্ষিণ দিকে খুলনা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। আঠারোটি বাঁকে নদীটি প্রবাহিতহয় বলে নামকরণহয়েছে আঠারোবাঁকি। প্রায় দুশো বছর ধরে এই বাঁকের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে। সারাবছর জোয়ার-ভাটা দ্বারা নদী ও পার্শ্ববর্তী জনবসতি প্রভাবিত হয় এবং নাব্য থাকে।
খুলনা জেলার রুপসা নদীর নিকটবর্তী ভেরব নদে এই নদী পতিত হয়েছে। রুপসা উপজেলার আইলপুর প্রামের কাছে ফতেপুর মৌজায় ভৈরবের সাথে মিলিত হয়ে প্রবাহটি বাগেরহাটের দিকে গেছে। সুলতানি আমল সম্ভবত ফতেপুর গ্রামে একটি কেল্লা নির্মিত হয়েছিলো।তাই একে এখনও কেল্লাফতেপুর নামেও আখ্যায়িত করতে শোনা যায়। খুব সম্ভবত বাংলার সুবাদার ইসলাম খান (১৬০৮-১৩)ও তার বাহিনী আঠারোবাঁকি নদী পার হয়ে ভৈরব-আঠারোবাঁকি নদীসঙ্গমস্থলে ভূষণার অধিপতি ছত্রাজিতকে পরাজিত করেছিলেন।
প্রবাহ
আঠারোবাঁকি নদীটি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পাহাড়ভাঙ্গা ইউনিয়নে প্রবাহমান মধুমতি নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতপর এই নদীর জলধারা মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী এবং রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ও নাইহাটি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খুলনা জেলার সদর উপজেলার ওয়ার্ড নং ২১-এ রূপসা নদীতে পতিত হয়েছে।
অবস্থান
আঠারবাঁকি নদীটি দিয়ে জাহাজ চলাচল করলেও বর্তমানে নদীটি মৃতপ্রায়। নদীটির বৃহৎ অংশ খুলনা জেলার তেরখাদা ও বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত। দুই উপজেলার সীমানা নির্ধারণকারী মৃতপ্রায় এই নদীটি বর্তমান সরকার পুনঃখননের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে। এটি সম্পন্ন হলে এই অঞ্চলে নৌ যোগাযোগ অনেক সহজ হবে। এককালে এই নদী দিয়ে স্টীমার, লঞ্চ খুলনা থেকে গোপালগঞ্জ, বরিশাল অতি অল্প সময়ে যেতে পারত।
তথ্যসূত্র
১. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, বেঙ্গল পাবলিকেশন্স, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ (দ্বিতীয় প্রকাশন), পৃষ্টা ১৩৯, ISBN-978-984-91643-5-7
২. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। “খুলনার নদ-নদী”। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২১ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৪।
৩. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১৫, পৃষ্ঠা ১৬, আইএসবিএন 984-70120-0436-4
৪. উইকিপিডিয়া